RAM কি? ভার্চুয়াল র্যাম কি? কত জিবি RAM প্রয়োজন

অনেক সময়ই একটি ফোনের পারফরম্যান্স ওই ফোনে কত জিবি র্যাম আছে তা দেখে বিচার করা হয়। অনেকের মতে যে ফোনের র্যাম যত বেশি সেই ফোন তত ভালো। সেই ফোনের পারফরম্যান্স তত ভালো হবে। যারা এমনটা ভাবেন তারা অনেকেই জানেন না যে একটি স্মার্টফোন এই র্যাম এর কাজ কি। যার ফলে বিভিন্ন ভুল ধারণার সৃষ্টি হয়। তাই আজকের এই আর্টিকেলের আপনাদের জানানোর চেষ্টা করবো, র্যাম কি। পাশাপাশি, র্যাম কিভাবে কাজ করে এবং একটি এন্ড্রয়েড ফোনে কত জিবি র্যাম প্রয়োজন। আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে র্যাম সম্পর্কে আপনাদের মনে ভুল ধারণা থাকলে তা পরিবর্তন হবে। পাশাপাশি RAM এর সম্পর্কে খুব প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য জানতে পারবেন। যা প্রতিটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর জানা খুবই প্রয়োজন।

তবে র্যাম কি, র্যাম এর কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হলে সর্বপ্রথম আপনাকে মেমোরির রিড ও রাইট (read-write) স্পিড সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। চলুন এর ব্যাপারে জেনে নেই

মেমোরির রিড ও রাইট (read-write) স্পিড কি?

আমরা যখন কোনো ফোন ব্যবহার করি তখন তার মেমোরির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফাইল রাখতে হয়। এবং পরবর্তীতে যখন ওই ফাইলগুলো ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তখন মেমোরি তে গিয়ে সেই ফাইলগুলো ওপেন করে ব্যবহার করতে পারি। আমরা যখন মেমোরির মধ্যে কোন ফাইল রাখি তখন সেই প্রক্রিয়াকে মেমোরি রাইটিং বলা হয়।

Read and write speed of a memory

অর্থাৎ সহজ ভাষায় মেমোরির মধ্যে কিছু ডাটা লেখা হয়। এখানে লেখা বলতেই সাধারণ অক্ষর বা শব্দ দিয়ে লেখা নয়। এই লেখা হয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে। এই লেখা বা রাইট করার ফলে মেমোরির মধ্যে নতুন ফাইল এর সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে ওই ফাইল যখন আমাদের ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় তখন আমরা ফাইলটি ওপেন করি এবং আমাদের ফোন বা কম্পিউটার ওই ফাইলটি রিড করে। এখানে রিড বলতে পড়াকে বুঝতে পারেন। অর্থাৎ আমাদের ফোন বা কম্পিউটার ওই ফাইলের মধ্যে থাকা প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ কে পড়ে এবং সে অনুযায়ী আমাদের আউটপুট দেয়।

একটি ডিভাইস কত দ্রুত একটি ফাইলকে মেমোরি এর মধ্যে রাইট এবং রিড করতে পারে তার গতিকে রিড বা রাইট স্পিড (read-write) বলা হয়। রাইট (write) স্পিড এর ক্ষেত্রে কত দ্রুত একটি ফাইল মেমোরির মধ্যে তৈরি করা সম্ভব তার স্পিড কে বোঝায়। এবং রিড (read) স্পিড বলতে কত দ্রুত ওই ফাইলটিকে রিড করতে পারে তার গতি কে রিড স্পিড বলে।

এই রিড ও রাইট এর স্পিড দুইটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। প্রথমত প্রসেসর এর ক্ষমতা এবং দ্বিতীয়ত এবং মুখ্য বিষয়ে হচ্ছে মেমোরি বা স্টোরেজ টাইপ। একটি মেমোরি বা স্টোরেজ চিপ কত দ্রুত রিড এবং রাইট করতে পারবে তা নির্ভর করে ওই চিপ কোন টেকনোলজিতে তৈরি তার উপর। এই বিষয় আজকের আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়লেই বুঝতে পারবেন।

র্যাম কি? র্যাম কাকে বলে?

RAM (র্যাম) এর পূর্ণরূপ হল Random Access Memory (রেনডম এক্সেস মেমোরি)। RAM শব্দের পূর্ণরূপ থেকেই বুঝতে পারছেন এটি এক ধরনের মেমোরি চিপ। এবং মেমোরি চিপ বলতে আমরা যা বুঝি তা হচ্ছে স্টোরেজ। যার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফাইল রাখা বা সংরক্ষণ করা অর্থাৎ রাইট করা যায়। পাশাপাশি এটাকে ব্যবহার করা অর্থাৎ রিড করা যায়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে র্যাম এবং সাধারন স্টোরেজের(ROM=Read Only Memory) মধ্যে পার্থক্য কি? যেহেতু দুইটাতেই ফাইল রিড এবং রাইট করে ব্যবহার করা যায়। এটা জানতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে র্যাম ও রম কি?

RAM ও ROM এর মধ্যে পার্থক্য

যে বিষয়টি RAM ও ROM এর মধ্যে পার্থক্য তৈরী করে তা হলো এর কাজ করার গতি বা স্পিড। র্যাম, সাধারণ রম বা স্টোরেজের তুলনায় বেশ কয়েক গুণ বেশি ফাস্ট হয়ে থাকে। RAM এর read-write স্পিড ROM এর তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে।

আমরা যখন স্মার্টফোন ব্যবহার করি তখন আমাদের ফোনের প্রসেসর থেকে বিভিন্ন ডাটা ফোনের বিভিন্ন অংশে পাঠানো হয়। একটি ডিভাইসের স্টোরেজ যত ফাস্ট হবে প্রসেসর ততো দ্রুত মেমোরি থেকে ডাটা প্রসেস করে তার আউটপুট দিতে পারবে। একটি স্মার্টফোন সুপারফাস্ট কাজ করার জন্য সুপার ফাস্ট স্টোরেজের বা মেমোরি প্রয়োজন হয়। এই ফাস্ট স্পিড শুধুমাত্র র্যাম দিতে পারে। কিন্তু র্যাম এর দাম সাধারণ স্টোরেজ বা রম এর তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। এই জন্যই স্মার্টফোনে ROM এর তুলনায় RAM কম দেওয়া হয়।

র্যাম কিভাবে কাজ করে?

আমার যখন স্মার্টফোনে কোনো এপ্লিকেশন ইনস্টল করি তখন সেই অ্যাপ্লিকেশনের ডাটা ROM মেমোরিতে ইন্সটল হয়। এরপর যখন আমরা অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করার জন্য ওপেন করি তখন ওই অ্যাপ্লিকেশন এর ডাটা রম মেমোরি থেকে RAM মেমোরিতে ট্রান্সফার হয়ে যায়।  এর ফলে ফোন খুব কম সময় অ্যাপ্লিকেশন ডাটা প্রসেস করে আপনাকে আউটপুট দিতে পারে। কারণ প্রসেসর যখন অ্যাপ্লিকেশনের ডাটাকে প্রসেস করে তখন প্রসেসরকে প্রচুর পরিমাণে রিড এবং রাইট এর কাজ করতে হয়। র্যাম এর read-write স্পিড অনেক বেশি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে যদি RAM ব্যবহার না করে ROM ব্যবহার করা হতো তাহলে অ্যাপ্লিকেশনটি খুব স্লো কাজ করতো। আপনি ঠিক মত ব্যবহার করতে পারতেন না।

আপনি যত বেশি পরিমাণে অ্যাপ্লিকেশন একসাথে রান করবেন আপনার ডিভাইসের RAM এর তত বেশি জায়গা দখল করবে। বড় বড় অ্যাপ্লিকেশন এর ক্ষেত্রে ডাটা ট্রান্সফার সরাসরি হয়ে থাকে। যেমন আপনার ফোনের RAM যদি 2GB হয় এবং আপনি যদি 4GB এর একটি গেম রান করেন এক্ষেত্রে আপনি গেম এর মধ্যে ম্যাপ এর যেই জায়গায় অবস্থান করবেন শুধুমাত্র সেই জায়গার ডাটা ROM থেকে RAM এর মধ্যে লোড হবে। যার ফলে র্যাম কে সম্পূর্ণ 4GB এর ফাইল লোড করতে হয়না। এবং খুব সহজেই আপনি কম র্যাম নিয়ে বড় অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করতে পারেন।

একটি এন্ড্রয়েড ফোনে সর্বোচ্চ কত জিবি র্যাম প্রয়োজন?

এখন সব থেকে বড় কথা হচ্ছে একটি এন্ড্রয়েড ফোনে সর্বোচ্চ কত জিবি র্যাম প্রয়োজন? একজন সাধারন ব্যবহারকারীর জন্য 4 জিবি র্যাম যথেষ্ট। সাধারণ applications যেমন ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ বা নেট সার্ফিং এর জন্য 4GB RAM যথেষ্ট ভালো সার্ভিস দিবে। তবে আপনি যদি একজন গেমার হয়ে থাকেন অথবা ভারী এপ্লিকেশন নিয়ে প্রচুর মাল্টিটাস্কিং করেন সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 6GB কিংবা 8GB র্যাম যুক্ত ফোন নিতে পারেন।

তবে বেশি র্যাম যুক্ত ফোন নেওয়া কখনোই বিফলে যায়না। কারণ ভবিষ্যতে অ্যান্ড্রয়েড এর যে application গুলো আসবে সেগুলো ব্যবহার করার জন্য ততো বেশি RAM এর দরকার হবে। এতে বেশি র্যাম ভ্যারিয়েন্ট নিলে দীর্ঘদিন ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাওয়া সম্ভব। তবে কখনোই বেশি RAM এর ফোন নিতে গিয়ে খারাপ প্রসেসর দেওয়া ফোন কিনবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে।

র্যাম এর সাথে সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন এর সম্পর্ক

স্মার্টফোনের র্যাম কতটা ভালো সার্ভিস দেবে তা অনেকটাই নির্ভর করে সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন এর উপর। কারণ ফোনের সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র সফটওয়্যারই করতে পারে। ফোনের কোন ফিচার কিভাবে কাজ করবে তা সম্পুর্ন সফটওয়্যার এর উপর নির্ভর করে। আপনার ফোনে যদি 8GB কিংবা 12GB র্যাম হয়ে থাকে কিন্তু সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন ভালো না হয় সে ক্ষেত্রে আপনি মাল্টিটাস্কিং এর ক্ষেত্রে খুবই বাজে এক্সপেরিয়েন্স পাবেন।

এই বিষয়টা একটি উদাহরণের মাধ্যমে খুব সহজেই বোঝা সম্ভব। আমরা সবাই জানি আইফোন এর সফটওয়্যার অপটিমাইজেশন বেস্ট হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে আইফোন 2GB বা 3GB র্যাম নিয়েও খুব ভালো মাল্টিটাস্কিং করতে পারে। যেখানে অ্যান্ড্রয়েড ফোন 4GB থেকে 6GB র্যাম নিয়েও কিছুক্ষণ পরেই ব্যাকগ্রাউন্ড এপ্লিকেশনগুলোকে কিল বা ক্লোজ করে ফেলে।

এখানে আইফোনের ক্ষেত্রে বেটার মাল্টিটাস্কিং পাওয়ার কারণ হল আইফোনের সফটওয়্যারের মধ্যে র্যাম ম্যানেজমেন্ট সঠিকভাবে করা হয়। যার ফলে কম র্যাম থাকা সত্ত্বেও ভালো সফটওয়্যার এক্সপেরিয়েন্স দিতে পারে। তবে বর্তমান সময়ে অ্যান্ড্রয়েড বেশ অনেকটা উন্নতি করেছে এই র্যাম ম্যানেজমেন্টের বিষয়। তবে তা কখনোই আইফোনের মত অপটিমাইজড না।

ভার্চুয়াল র্যাম বা ভার্চুয়াল মেমোরি

Virtual ram, ভার্চুয়াল র্যাম
Image source Jamesandco.in

বর্তমানে স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম প্রচলিত মার্কেটিং করা হয় যে বিষয় নিয়ে তা হচ্ছে ভার্চুয়াল র্যাম। এই ভার্চুয়াল র্যাম এর পরিমান অনেক সময় ফিজিক্যাল র্যাম এর তুলনায়ও বেশি হয়ে যায়। কিন্তু এই ভার্চুয়াল র্যাম কি আসলে ফোনের নরমাল RAM এর মত কাজ করতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথমে ভার্চুয়াল র্যাম কি সেটা জানতে হবে।

ভার্চুয়াল র্যাম কি?

ফোনের RAM এর পরিমাণ বাড়ানোর জন্য সফটওয়্যার এর মাধ্যমে ফোনের ROM বা স্টোরেজ মেমোরি থেকে কিছু অংশ আলাদা করে RAM এর সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়। স্টোরেজের এই আলাদা অংশকেই ভার্চুয়াল র্যাম বলা হয়। অর্থাৎ ফোনের যে মেমরিতে আপনি বিভিন্ন ছবি, ভিডিও, অডিও, ফাইল সংরক্ষণ করে রাখেন সেই Memory এর অংশ থেকে কয়েক জিবি স্টোরেজ নিয়ে আলাদা একটি পার্টিশন তৈরি করা হয়। যে পার্টিশন প্রয়োজনের সময়ে RAM এর সাথে যুক্ত হয় এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ফোনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারে।

ভার্চুয়াল র্যাম কতটুকু প্রয়োজনীয়?

এই আর্টিকেলের শুরুতেই একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। সেটা হলো মেমোরির রিড এবং রাইট স্পিড। সেখানে এটা উল্লেখ করেছিলাম যে, রম এর  রিড ও রাইট স্পিড RAM তুলনায় অনেক কম হয়ে থাকে। ফোনের RAM কিভাবে কাজ করে সেই অংশ আপনাদের জানিয়েছিলাম যে ফোনে আলাদাভাবে RAM মেমোরি ব্যবহার করা হয়। কারণ প্রসেসর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ফাস্ট রিড এবং রাইট যুক্ত মেমোরি এর দরকার হয়। সে ক্ষেত্রে মেমোরির স্পিড যদি SLOW হয় প্রসেসর কখনই সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না। যার ফলশ্রুতিতে পারফর্মেন্সের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব দেখা যাবে।

ঠিক তেমনিভাবেই ফোনে স্টোরেজকে RAM হিসেবে ব্যাবহার করলে তা কখনোই ফোনের অরিজিনাল RAM বা ফিজিক্যাল RAM এর মত কাজ করতে পারবে না। অর্থাৎ ভার্চুয়াল RAM কখনোই ফিজিক্যাল RAM এর মতো বা বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে না।

ভার্চুয়াল র্যাম কেন ব্যবহার করা হয়?

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল র্যাম অনেক কার্যকরী হয়ে ওঠে। যেমন আপনার ফোনে যদি কম র্যাম থাকে এবং  আপনি যদি একসাথে ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেকগুলো এপ্লিকেশন রানিং রাখেন সে ক্ষেত্রে তা আপনার ফোনের RAN এর অধিকাংশ জায়গা দখল করে রাখবে। অনেক সময় RAM ফুল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যার ফলে প্রসেসর সঠিকভাবে RAM কে ব্যবহার করতে পারে না। এতে ফোনের পারফরম্যান্স ড্রপ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ঠিক এমন অবস্থায় ভার্চুয়াল RAM কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আপনি যেই অ্যাপ্লিকেশনগুলো বারবার ব্যবহার করছেন সেই অ্যাপ্লিকেশনগুলি শুধুমাত্র ফিজিক্যাল RAM এর মধ্যে রেখে পুরনো চলমান অ্যাপ্লিকেশনগুলো ভার্চুয়াল র্যাম এর মধ্যে ট্রানস্ফার করে দেওয়া হয়। যার ফলে ফিজিক্যাল র্যাম এরমধ্যে খালি জায়গার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং প্রসেসর সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।

পরবর্তীতে আপনি যখন সেই পুরোনো অ্যাপ্লিকেশনগুলোর একটি ওপেন করেন তখন ফোন ওই অ্যাপ্লিকেশন এর ডেটাকে ভার্চুয়াল RAM থেকে ফিজিক্যাল RAM এর মধ্যে ট্রানস্ফার করে এবং স্বাভাবিক ভাবে কাজ করে। এতে যদিও অ্যাপ্লিকেশনটি আগের অবস্থায় ওপেন হতে কিছুটা সময় বেশি লাগে। তবুও ভালো দিক হচ্ছে আপনি অ্যাপ্লিকেশনটির রানিং অবস্থায় পাচ্ছেন।

2010 সালের সময় যারা একটু এডভান্স লেভেলে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করতে জানতেন তারা অনেকেই এই কাজটি করতেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন হতো ফোন রুট করার। ফোন রুট করে ইচ্ছামত ইন্টারনাল স্টোরেজকে ভার্চুয়াল র্যামে পরিণত করে ব্যবহার করতেন।

তবে তখনকার সময়ে এই পদ্ধতিতে ঝুঁকি ছিল। প্রথমত ফোন রুট করতে হতো। এর ফলে ব্যবহারকারীকে ফোনের অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি হারাতে হতো। দ্বিতীয়ত, ROOT করার প্রসেস সঠিকভাবে না জানলে ফোন DEAD হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে আমরা সেই একই ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করতে পারছি। এক্ষেত্রে আমাদের স্মার্ট ফোন রুট করার প্রয়োজন পড়ছে না।

ভার্চুয়াল র্যাম কাদের জন্য?

ভার্চুয়াল র্যাম মূলত কার্যকর হয় তাদের জন্য যারা প্রচুর মাল্টিটাস্কিং করেন। তাদের ফোনের সাধারণ র্যামের সাথে সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে এই ভার্চুয়াল র্যাম। তবে যারা ভাবছেন যে ভার্চুয়াল র্যাম আপনার গেমিং এর জন্য কার্যকরী হবে তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ গেমিং এর জন্য প্রয়োজন হয় দ্রুতগতির রিড এবং রাইট ক্ষমতা সম্পন্ন মেমোরির। যা শুধুমাত্র ফিজিক্যাল র্যাম দিতে পারে। সুতরাং আপনি যদি ভাবেন যে আপনার ফোনের 4 জিবি র্যাম এর সাথে আরো 4GB ভার্চুয়াল র্যাম যুক্ত হলে 8GB র্যাম এর ফোনের মত গেমিং পারফরম্যান্স পাবেন তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন। গেমিং আপনার মেইন প্রায়োরিটি থাকলে সর্বদা আপনার বাজেটের ভালো প্রসেসরযুক্ত ফোন নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

র্যাম কত প্রকার?

DDR র্যাম এবং LPDDR র্যাম কি?

DDR RAM এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Double Data Rate Random Access Memory(RAM)। এই DDR র্যাম ব্যবহার করা হয় ডেক্সটপ কম্পিউটার এর জন্য। LPDDR RAM এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Low-Power Double Data Rate Randon Access Memory (RAM)। এই LPDDR র্যাম ব্যবহার করা হয় স্মার্টফোন এর জন্য। এই LPDDR র্যাম স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয় কারণ এটি কম বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে। যার ফলে স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ তুলনামূলক ভালো পাওয়া যায়। LPDDR র্যাম এর বেশ কয়েকটি সিরিজ রয়েছে। যেগুলো প্রতিটি আলাদা আলাদা ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে। নিচে দেওয়ার ছক থেকে খুব সহজেই প্রতিটি র্যাম এর বিস্তারিত তথ্য এবং ক্ষমতা বুঝতে পারবেন

LPDDR RAM series and their power
Image source Wikipedia